অপেক্ষা


শববাহী গাড়ীটা শম্বুক গতিতে এগুচ্ছিলো।

সঙ্কীর্ণ রাস্তার দুদিকে ক্ষণিকের ব্যস্ততা, আলোর রোশনাই 

আবার লম্বা টানা অন্ধকার , চুপ চাপ মালবাহী লরি গুলো দেওয়ালের গা ঘেঁসে দাঁড়িয়ে।

শব শূন্য গাড়ীটার কোন তাড়া নেই ,

মৃত লোকেদের ভিড় কে পাশ কাটিয়ে বড় সাবলীল গতিতে গাড়ীটা চলছে ।

পাছে ভুল লোক চড়ে বসে তাতে ।

অনেক রাতের যাত্রীরা হাত দেখাচ্ছিল, সে দেখেও দেখেনি .

শেষ বাস মিস করা যাত্রীরা হাত দেখাচ্ছিল সে গতি কমায় নি একটুও

কিছু মাতাল জোর করে চাপতে চাইছিল

একতা হিজড়ে কাচে টোকা দিয়ে পয়সা চাইছিল 

ট্রাফিক পুলিশও তার পাওনা বুঝে নিতে হাত দেখিয়ে ছিল

কোন কিছুকে ভ্রুক্ষেপ না করে সে আপন মনে এগোচ্ছিল।

নিঃশব্দ অহংকারে বড় সহজ ভাবে সে এগোচ্ছিল ।

ঠিক আমার সামনেই সে যাচ্ছিল  

তার চালকের আয়নায় আমার মুখচ্ছবি পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে ।

আমার অকারন উত্তেজনা, রাগ, ভ্রুকুটি, স্লথতাকে মেনে না নেওয়ার ক্ষোভ 

কোন কিছুই তার আয়না থেকে বাদ যাচ্ছিলনা।

আমার মুখের প্রতিটা বলিরেখা ও স্থির দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছিল

আমার অস্থিরতা ওই ঠাণ্ডা গাড়ির আয়নায় একটা স্থির প্রতিচ্ছবি ছাড়া কিছুই ছিল না।

ওর তো আদৌ কোন তাড়া ছিলনা ।

শুধু একটা সঠিক জীবন সে খুঁজছিল যার মৃত্যু কে ও বইবে

পরম শ্রদ্ধা নিয়ে সে একটিবারের জন্য সত্যি মৃত কাউকে বইবে 

যে কিনা এতদিন বেঁচে থেকে মারা যাবে এই প্রথম ও শেষ বার।

তাই আরও অপেক্ষাতে সে শম্বুক গতিতে এগুচ্ছিল

ঠিক আমার সামনে , তার কাচের আয়নাতে আমার মুখচ্ছবি স্থির।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *