বিস্মৃত সমারোহ( a lost memory in Delhi) ( কাব্য গ্রন্থ : জারজ খোলস the veiled suite )

বিস্মৃত সমারোহ( a lost memory in Delhi)

যে বাসটা হুডমুডিয়ে আচমকাই রাস্তায় নেমে এলো

তুমি তাকে আমার জন্মের অনুলিপি বলতে পারো।

আসলে জন্ম থেকেই আমি আমার বাবা মায়ের চেয়ে বয়সে  বড় ছিলাম ,

আর ওদের পেরিয়ে যমুনার পাড়ে আমার আনেক আগে থেকেই অগাধ বিচরণ।

মা আমার মা তখন সদ্য বিবাহিতা 

জরির শাড়ীতে রুপোলী সব চুমকি মায়ের চোখ মুখে চকমক করছে।

আমাকে জন্মাতে সেও তো দেখতে পেলনা  ,

প্রসব  যন্ত্রণার সময় তার পায়ের নূপুরের নিক্বণ অস্পষ্ট ঘুরে বেড়াচ্ছিল  ,

যেন দূর কোন নিষিদ্ধ নগরীর চাপা  কথপোকথন।

 তখন  চায়ের দোকানে জ্বলে উঠছিল সব সাঁঝ বাতিরা 

আর রাতের তারারা একে একে কাচের পাত্রের বাদ্যযন্ত্র নিয়ে রাস্তায় ,

সারিবদ্ধ ভাবে তারা দেয়ালে ঝোলান মলিন কিছু অ্যালবামের ঘর গুলোতে ,

ঝরে পড়া পলাস্তারা ঝেড়ে সমস্ত তেলকুপিতে তেল ভরে রাখছে ।

যেন সমারোহ সাজাচ্ছে কোন আগন্তুকের ।

অথচ আমি তো  অনেক আগেই এসে কড়া নাড়ছিলাম আমাদের ঘরে ,

আমার চেয়ে বয়েসে অনেক ছোট আমার বাবা মাকে বলতে চেয়েও ছিলাম সে কথা ,

রাত্রির নৈঃশব্দ্য ওদের যেন আরো বেশী মুক করে দিয়ে ছিল ,

ওদের বধির কানে তারাদের আওয়াজ ছাপিয়ে আমার  দরজায় ধাক্কা ঢুকতেই পারলনা 

কাশ্মীরের পোস্টকার্ড : আগা শাহিদ আলি (কাব্য গ্রন্থ : জারজ খোলস the veiled suite )

পুরো কাশ্মীর  রাজ্যটাই আমার ছোট্ট এই ডাকবাক্সে শান্ত হয়ে শুয়ে আছে ।

যেন এক পরিচ্ছন্ন হিমালয় আমার হাতের তালুর উপর সমাহিত ।

আমার বাড়ি ফেরার আগেই দিগন্তে সূর্য অস্ত গেছে ,

ঝিলমের জল ঘোলা হয়ে গেছে অনেকদিন, 

এখন  তার  পাড়ে আমার ভালবাসা আরও বেশী নগ্ন ও নির্জন।

আমি যেন সেই বিস্মৃত অতীত কে আঁকড়ে রাখি এক বিরাট সাদা কালো ক্যানভাসে-

এক  অসম্পূর্ণ  আর অব্যাক্ত পট চিত্রে যত্ন করে ।

infected…….

“They have thrashed him like a rebel , they have humiliated him like a beggar, they have shoved him out of boundary . They are so scared of his infection !

They are so scared of his passion. They are so scared of any revolution.

They never dared to look at his eyes , they never dared to listen to his voice , they are so scared of his infection!

And he bled from his heart , he bled from his head , he bled from everywhere of his body. They dragged him on his blood trail . They are so scared of the infection !

He now bleeds outside the boundary , he now bleeds to the death , he now bleeds in his dream. He now saw the lines on the wall “welcome to world of revolution” . He now saw his warm infected blood keeps trickling everywhere. He now saw the purpose beating his heart harder.

He will now wait for resurrection. He will wait to rise again like phoenix. He is the pathogen of change , he will never die…

…….

অন্তর্জাল (internet)

ঘোরতর   সঙ্কটে আজ আমরা সব এই  অমৃতের পুত্ররা ,
খুঁজে বেড়াই জীবনের মানে নিত্য নতুন  অন্তর্জালে .

সত্যি মুখ  ঢেকে যায়  কতগুলো মুখোশের আড়ালে
বদলে যায় শরীর , থেকে যায় সেই নোতুন অস্তিত্ব সংজ্ঞা হীন , সংখ্যাহীন,
চারিদিকে  জালের  আড়ালে কতগুলো কায়াহীন প্রাণহীন নামের উচ্ছৃঙ্খল তাণ্ডব ।

 কেউ মদ্য পায়ী দেবদাসপারুল খুঁজে বেড়ায় , কেউ বলে “লাভ ইজ ব্লাইন্ড” আবার কারুর নাম ক্যানাবীস  কালচার”
নামের আড়ালে  কোন অস্ফুট ইতিহাস বলে যায় অশরীরী বন্ধুত্বের কাছে এক অবাঞ্ছিত স্বীকারোত্তি । ।

কেউ  প্রত্যাখ্যাত , কেউ বিকৃত , আবার কেউবা নিছক  মজার ব্যাপারী ।
হাত বদল হয় মনের , মন বদল হয় শরীরের , বদলে যায়  বয়স পিছু হটে যায় সময় ,
বাসাংসী জীনা্নী ছেড়ে সত্ত্বা বাসা বাঁধে নিত্য  নতুন মায়াময় জালে,
হে অন্তর্জাল তুমি কি সত্যিই আমাদের এবার অমর করলে ?

আসক্তি

কবিতা খুঁটে খুঁটে খাওয়ার কুঅভ্যাস আমার অনেক দিনের ।

অতীতের অন্ধকার কুলুঙ্গি হাতড়ে  ,

কখনো বিস্মৃতির  শ্যাওলা ধরা কার্নিশ বেয়ে

কতদিন যে আমার পিচ্ছিল শব্দ গুলোকে খুঁজে বের করে চিবোতে থাকি আনমনে

সঙ্গোপনে ।

দীর্ঘদিনের বুভুক্ষু শরীরে পাক দিতে থাকে ওরা কড়া পাকের নেশা ছড়িয়ে ,

দিনভর ওদের সাথে আমার খুনসুটি , হুটোপাটী, সে এক অদ্ভুত ভালবাসাবাসি ।

তারপর যখন ক্লান্তিতে চোখ বুজে আসে ,

যখন এতদিনের মরচে ধরা, ছাতা পড়া  শব্দগুলো নিয়ন্ত্রণ নেয় আমার স্নায়ুর ,

কিছু ব্যাক্ত আর কিছু অব্যাক্তর গা বেয়ে তারা উঠে আসে  সব ছন্দহীন , দিশাহীন, সম্পূর্ণ অগোছালো ,

আমি  স্বপ্ন দেখি এক সুসজ্জিত ঘরে সুবেশ সব মানুষ মানুষীরা  একেক সুস্বাদু পদ তুলে নিচ্ছে অত্যন্ত সুচারু আর সুসংবদ্ধ  ,

আর তাদেরই সুগঠিত বাক্যজাল আর সুবিন্যস্ত গদ্যময় উপস্থিতির মাঝখানে

এক  কোন অদ্ভুত  ণৈব্যক্তি তার অখ্যাত কোন এক পদ্যের ছেড়ে আসা কমা , পূর্ণচ্ছেদ  নিয়ে যেন এক যতি হীন আশ্লেষে মেতেছে ,

সাহসী , উদ্দাম অথচ নিরুচ্চার এক সোহাগে ।

আজকের ঋত্বিক

তোমার নাম যখনই উঠেছে তখনি শুরু হয়েছে এক তীব্র দহন,

জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে শহর প্রাসাদ আর রাজতন্ত্র

অসম্ভব স্পর্ধা নিয়ে এই আমি এক ছাপোষা শরীরে উচ্চতা বাড়িয়েছি

আরও এক হাত।

আমার ঠোট কালো ,শুকনো আর ফেটে যাচ্ছে অহরহ,

এবার যদিও ঠাণ্ডা তেমন পড়েনি ।

আমার চোখ এখন আরও ধারাল ,চিবুক শক্ত , চুল আরও উসকো খুসকো

না আমি এখনো মশাল জ্বালিনি ।

যকৃত পাকস্থলীতে আছড়ে পড়ছে কম পয়সার কটু মদ,

কে যেন তাতে বিষ মিশিয়েছে,

পৃথিবীতে দুঃখী মানুষের সংখ্যা কমানর জন্যে।

ওরা কেউই জানলনা যে

আমি কিন্তু আজ নীলকণ্ঠ হয়েছি ।

বিবর্ণ মৃত্যুর মিছিল -১    জাম বনি

অনেক খবরের মাঝে ওটাও একটা  খবর

একটু বিস্তৃত , কিন্তু অতটাও নয় যে দুবার পড়তে হবে ।

সংবাদ মাধ্যম এখনও সময় করে উঠতে পারেনি বিশদ ভাবে বোঝার যে

সেই সন্ধ্যায় কি হয়ে ছিল ?

সেদিন কি বৃষ্টি একটু বেশি সময় ধরে পড়ছিল?

সেদিন কি রাস্তায় কোন আলো ছিলনা ?

আর কুকুরেরা? যারা পথ চলতি মানুষ দেখলেই চিৎকার করে ,

ওরা কি সবাই যে যার বারান্দা ধরে নিয়েছিল , নিশ্চিন্ত বারান্দা ।

একলা ফোন বেজেই গেল … ছেলের টা কেউ ধরল না , বউয়ের টাও নয় ,

আর মায়ের চোখ ঠায় তোরণের দিকে , পুরনো ছবিগুলোর পুনর্নির্মাণ , কেউ যেন দিন গুলো পিছনে টানছে …।

সামনে  তীর বুকের বাঁ দিক ঘেঁষে কাঁপছে আস্তে আস্তে , কেউ বুদ্ধি করে আধখানা কঞ্চি কেটে নিয়েছে ,  মানুষটার নিশ্বাস ধীরে ধীরে ফিকে হচ্ছে , মুখে বিড়বিড় কিছু আওয়াজ ।

তীরটার সামনে দু খানা ফলা ছিল , আর মৃত্যু নিশ্চিত করতে খুব কাছে থেকে তুন তানা হয়েছিল…………..

 

ভিজে  জমিতে গতকালই পাশের গাঁয়ের বউ ঝি মিলে ধান রোয়া  সারা করে গেছে ,

তাদের  ফেলে যাওয়া গায়ের আঁশটে গন্ধ ছাপিয়ে আল পথের ফাঁক দিয়ে জল পড়ার একটানা অবিশ্রাম আওয়াজে ধান চারা গুলোর  গোড়া শিথিল হচ্ছে ক্রমশ ,

থমকে থাকা পেট্রলের এক বিষণ্ণ ধোঁয়া ভেজা কুয়াশাকে আরও ভারি  করে রেখেছে  ।

আধশোয়া  বাইকটা একটু দূর থেকে ওর মালিকের সাথেই  শেষ  ধড়পড়ানি টুকু ভাগ করে নিচ্ছিল এই কিছুক্ষণ আগেও।

এখন জলের আওয়াজ অনেকটাই গা সওয়া হয়ে গেছে নিথর শরীরটার।

বাইকের ইঞ্জিন ও থেমে গেছে ,

মোবাইল টা বন্ধ হয়ে গেছে সবার আগে ।

সকালের আকাশ সবুজ চারা গুলোর মাঝখানে রং ঢালার আগেই  কেউ জলে সিন্দূর মিশিয়ে গেছে  ।

ফিসফিস কিছু আওয়াজ এগিয়ে আসছে চারিদিক ঘিরে ,

খুব সম্ভব একটা পুলিসের গাড়ির  সাইরেনও শোনা যাচ্ছে এগিয়ে আসতে দ্রুত গতিতে।

এবার খবরের  গায়ে রং লাগবে , রক্তের চেয়েও  গাঢ কোন রং

এবার খবর বিকোবে চারিদিক , রাজনীতি , সন্ত্রাস , নির্বাচন ,   গোষ্ঠী দ্বন্ধ এই সব  শব্দ গুলোর ওপর  বিছানো হবে ওই গলা ফালা করে দেওয়া শরীরটা । রাজধানী থেকে নেতারা আসবে স্বত্ব দাবি করতে , মৃতদেহের ওপর স্বত্ব।

আর রাত বাড়লেই দূরদর্শনে  জোর আলোচনা হবে সেই শবের দল ভুক্তি নিয়ে ,জীবনের চেয়ে মৃত মানুষের  দাবিদার  চিরকালই  কয়েকগুণ  বেশী।

এবার  কিছু লোক টানাটানি করবে , দলাদলি করবে শব দেহ ঘিরে ।

কিছু কাগজের সপ্তাহান্তের রসদ ।………

 

আর  কাল রাতের  সাক্ষী কুকুরগুলো  গুটিশুঁটি  মেরে বারান্দা ছেড়ে  দাঁড়াবে এসে রাস্তায়  আর

ভীত , সন্দিগ্ধ চোখে  খেয়াল রাখবে

দুপেয়ে নৃশংসতা থেকে দূরত্বটা  যেন কমে না যায় কোন ভাবে।

 

 

 

 

 

 

 

 

ইচ্ছামৃত্যু ?

মৃত্যু তুমি কার? আমার না  অপরের ?

ওপারের অন্ধকার আমায় হাতছানি দিয়ে ডাকে,

আর এপারের বেসাতি , পরিষেবা ,বিপণন জোর করে মেলে ধরে আমার শরীর।

প্রযুক্তি আর বিজ্ঞানের কাঠামোয় ।

 

সাহিত্য , কাব্য , উপন্যাসের শব্দ বিন্যাসে ওরা আমার মৃত্যুকে অমর করেছে ,

অপারেশন থিয়েটার , আই শি উ আর ভেন্টীলটরের আয়েশি ঠাণ্ডায় আমার মৃত্যু রাত জেগে থাকে তার প্রিয়জনের ফিসফিসানি আর খবরের কাগজের বিস্ময়ে ।

 

অথচ এমনটি হওয়ার কোন কথাই ছিলনা …

সেই যুবতী “কুইনিন”  যেদিন কোমায় আছন্ন  শরীরে  মৃত্যুকে প্রথম প্রশ্ন করল ,

যেদিন চার্চের  গোঁড়ামি আর  চিকিৎসা শাস্ত্রের  মধ্যে টেনে দিল সংঘাত রেখা, যখন কিনা জন্ম নিলো কিছু নতুন শব্দের উথেনেসিয়া , মারসিকিলিং , নিষ্কৃতি মৃত্যু …।

মৃত্যু আবার জন্ম  নিলো  বিজ্ঞ্বানের পাতায় ।

 

আজ তাই মৃত্যু তাই ভীষণ ভাবে জীবিত নতুন নতুন শব্দের শরীর নিয়ে ।

কিছুটা গবেষণার বই ,আর কতকটা বিচারের কাঠগড়ায় ,

আর অনেকটাই বিতর্কের প্রাজ্ঞ্তায়।

 

মৃত্যু আজ শব্দ আর শ্লাঘার মায়াজালে   আবদ্ধ এক গভীর আলোচ্য বিষয়।

মৃত্যু আজ আজ সাদা পরিচ্ছদের আড়ালে উন্নাসিক চিকিৎসকের অনুগত ভৃত্য।

মৃত্যু আজ শুভাকাঙ্খী পরিজন আর চিকিৎসা বিজ্ঞ্বানীর মধ্যে এক সম্পাদিত চুক্তি

মৃত্যু আজ দুই পক্ষের এক অলিখিত সমঝোতা ………

 

মুমূর্ষু রোগী যেখানে একবারেই এক  সাদামাটা তৃতীয় পক্ষ……

 

The Great Enigma by Tomas Transtromer(অনুবাদ পার্থ মিশ্র)

১)   কাঁচের  বয়ামে সরীসৃপেরা শান্ত , গতিহীন।

কোন এক এলোকেশী তার বারান্দায় নৈশব্দ কে মিলে রেখেছে একান্তে

মৃত্যুও এখানে শৃঙ্খলা বদ্ধ , নিয়মানুগ।

আর নীচে মাটির গভীরে আমার আন্তরাত্মা  যেন এক ধূমকেতু, আমি টেরপাচ্ছি তার দুর্বার আর দুর্বিনীত বায়বীয়  এক শব্দহীন নিঃসরণের ।

 

 

২)    পথের শেষে এ এক নতুন পরাক্রম

অনেকটা পেয়াজের খোসার মত , একটার  পর একটা মুখোশ , শিথিল, কিন্তু আবিরাম তার প্রকাশ।

 

 

৩)   রঙ্গমঞ্চ গুলো  ছেড়ে চলে গেছে সবাই , এখন রাত গভীর

কিছু শব্দতে কেউ আগুণ ধরিয়েছে সামনের দালানে ,

আর তার নরম আগুনে আঁচ পোয়াচ্ছে সেই অনুত্তর চিঠি গুলো

যেগুলোকে কেউ কোনদিন দিনের আলোতে দেখবেনা ।

 

 

৪)     ফাঁসির আসামি যখন দেওয়ালে প্রথম হাতুড়ি মারে

আগুনে আকাশ পাক খেতে থাকে দ্রুত

কয়েদীদের ছন্দ আবার ফিরে আসে তাদের যে যার জীবন কুঠুরিতে

শোনা যায় পদধ্বনি সুর করে ।

ধূলোটে আর ধোঁয়াটে মাটির ওপর ভাঙ্গা দেয়ালে  তখন ছোট্ট ছোট্ট আকাশ

আর তার মধ্যে  থেকে উঁকি মারছে চাঁদের মত ভেঙ্গে ফেলা পাথর গুলো ।

 

৫)    শহরে ঢোকার মুখেই ঘন ঘন ট্রাফিক সিগন্যালের মত

শবযাত্রা গুলো একের পর এক এগিয়ে এলো ।

সহস্র সহস্র মানুষ ছায়া হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ছায়াদের দেশে ,

দূরে কোথাও ফুটে উঠেছে এক অস্পষ্ট  সাঁকোপথ

জীবন আর মৃত্যুর মাঝখানে ।

 

৬)     এক বদ্ধ ঘরের অন্ধকার চৌকাঠ পেরিয়ে আমার পা।

সাদা কিছু জীবনের নথি পত্র দেখতে পাচ্ছি ,

অস্পষ্ট সব ছায়ারা সেখানে হুটোপুটি করছে নিজের নিজের সাক্ষর দেওয়ার জন্যে,

ততক্ষণে আমার আলোক স্নান সারা , আর সময়ের ভাজে আপাতত নিজেকে মুড়ে নিয়েছি আপাদমস্তক।

 

 

 

 

 

 

কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে – পার্থ মিশ্র

‘উবের’ ‘ওলা’ রা ধীরে ধীরে গিলে ফেলছে কলকাতার গল্প গুলো,

কলকাতার কথক ঠাকুর  সাদা কালো ট্যাক্সি গুলো এখন আর ইতিহাস বয়ে বেড়ায় না।

আভিমানী হয়ে ঘুরে বেড়ায় যাত্রী ছাড়াই ।

প্রশস্ত রাজপথে তাল মেলাতে পারেনা নতুন প্রযুক্তি আর বিলাসী  চলমান জীবনে ।

নিজেদের শহরে নিজেরাই ব্রাত্য , অপাঙতেয়

শীতাতপ সুদর্শন  গাড়ি গুলো কোন এক অদৃশ্য অন্তরজালে নিজেকে  জড়িয়ে অক্লান্ত সেবাতে প্রলুব্ধ করেছে এই প্রজন্মকে ।

নবীন যাত্রী গম্ভীর , গল্পহীন ।

আর কোন এক অদৃশ্য বিপণি শক্তিতে আজকের যাত্রা  , যান  আর  যাত্রি সবই সুনিয়ন্ত্রিত , যেখানে পুরনো ,ঢাউসগাড়িগুলো একবারেই অবাঞ্ছিত।

অথচ……

কত না কাহিনী সে বয়ে বেডিয়েছে সারা জীবন ।

নতুন প্রেম , প্রথম বহাল  নাকি  শেষ যাত্রা সবেতেই  তো সে ছিল কলকাতার সাথে ।

এই শহরের সাথে তার বড় হওয়া পিঠোপিঠি।

রেড রোডের গাচের ছায়ায় একটু জিরিয়ে নেওয়া  ,ধর্মতলার মালসা ভরা ঘন দুধের চা । ভোরের কুমোরটুলিতে  কচুরি জিলিপি।

সে এই শহরকে গড়তে দেখেছে  , ভাঙতে দেখেছে ।

অশান্ত এই শহর , উত্তাল এই শহর , মিছিলে হাঁটা এই শহর , আলসেমিতে ভোগা এই শহর,

সুখ অসুখ  এই শহরের সবই এত কাল বয়ে বেড়িয়েছে  সে এতদিন ।

আজ তাই সে বিলাসী সুখী গাড়িগুলোকে দ্রুত গতিতে পেরিয়ে যেতে দেখে  অকারণ অভিমানী ।